স্টাফ রিপোর্টারঃ
মাহে রমজানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ময়মনসিংহ মহানগর শাখার আয়োজনে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে ডাকাতের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২২শে ফেব্রুয়ারি) নগরীর পিয়াঙ্গন কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ময়মনসিংহ মহানগরীর আমির ও কেন্দ্রীয় কমিটির শুরা সদস্য মাওলানা কামরুল আহসান ইমরুল এর সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের পরিচালক ড.সামিউল হক ফারুকী।
সভার শুরুতেই অর্থসহ পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত পরিবেশন করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘ইসলামের মূল পাঁচটি স্তম্ভের একটি হচ্ছে যাকাত। কিন্তু আমাদের সমাজে নামাজ রোজার মতো যাকাতের উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। সমাজে বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্তভাবে যাকাত আদায় করা হচ্ছে। যাকাত আদায়ের পদ্ধতি এবং ব্যায়ের ক্ষেত্র সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা না থাকায় মানুষ এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ যাকাতের সুষ্ঠু বণ্টন ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ এবং রাষ্ট্র গঠন সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজে মনগড়া লোক দেখানো পন্থায় যে কিঞ্চিত যাকাত দেয়া হচ্ছে তা কারো উপকারে আসছে না। একদিকে মালের হিসাব-নিকাশ না করে সঠিকভাবে না দেয়ায় দাতার যাকাত আদায় হচ্ছে না। অপরদিকে, যাকাত গ্রহীতা এই অর্থ দিয়ে উপকৃত হতে পারছে না। হালাল মালামাল ছাড়া যাকাত আদায় জায়েজ নয়। হালাল রুজি ও মুত্তাকী না হতে পারলে যাকাত আদায় কবুল হবে না। তাই সর্বপ্রথমে নিজেদেরকে মুত্তাকী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। যারা জেনে বুঝে যাকাত দেয় না তারা দুনিয়া ও পরকালে লাঞ্ছিত হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন কুরআন সুন্নাহভিত্তিক ইসলামী অর্থনীতি।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজে যাকাত সম্পর্কে ধারণা থাকলেও উশর সম্পর্কে তেমন কোনো আলোচনা নেই। কিন্তু যাকাত এবং উশর উভয়ই পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। ইসলামী অর্থনীতিই একজন মুসলমানের ঈমানী মূল্যবোধ, উন্নত চরিত্রের সুষমা, আর শরয়ী অনুশাসনের দ্বারা মানুষের জন্য পুত-পবিত্র সুখ সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ সম্মানিত জীবন নিশ্চিত করতে পারে। তাই আমাদের আলেম সমাজকে যাকাত ও উশরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমাজের মুসলমানদের সচেতন করতে হবে। তাহলে সমাজ ও রাষ্ট্র এর সুফল ভোগ করতে পারবে।’
তারা বলেন- ‘আমাদের সমাজে যাকাত দাতা লোকের অভাব নেই। তবে যাকাতের খাতগুলো তাদের কাছে পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। যাকাত সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এ ধরণের সেমিনারের বিকল্প নেই। যাকাতভিত্তিক সমাজ না থাকায় সুদ মহামারি আকার ধারণ করেছে। আর ইসলামের মৌলিক স্তম্ভ যাকাত ও উশর প্রকৃতভাবে আদায় এবং ব্যবহার না থাকায় নানা বিপর্যয় ঘটছে। এ বিষয় নিয়ে আলেম সমাজকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।’
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- ময়মনসিংহের বিভিন্ন মসজিদের ইমামগণ ছাড়াও জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ স্থানীয় আলেম ও ইসলামী চিন্তাবিদগণ উপস্থিত ছিলেন।